
সম্প্রতি বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম কর্মীদের অপ্রত্যাশিত কর্মকান্ডের কারনে বিভিন্ন প্রশ্নের সুন্মখীন হতে হচ্ছে সকল গণমাধ্যম কর্মীদের। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে বিষয়গুলি তারা জানেন না কিন্তু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অথবা টকশোতে সে গুলি নিয়ে প্রশ্ন করে থাকেন। শুধু তাই নয় রীতি মতো তাদের অপমান ও অপদস্থ করেন করে থাকেন। এমন একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ জানিয়ে যা বললেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বাংলাদেশের একটি অঞ্চলের বেগুনে কিছু ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ভারী ধাতুর উপস্থিতি পাওয়া গেছে। কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ডাকা হয় গবেষণা দলের প্রধান বিজ্ঞানী অধ্যাপক জাকির হোসেনকে। বিষয়টি ভালোভাবে জানার জন্য এবং জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্যই হয়তো তাকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেই টকশোতে ঘটেছে উল্টো। টকশোতে উপস্থাপক তাকে ও অন্য দু’জন (অনলাইনে লিঙ্কযুক্ত) বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তাকে ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে বলা হয়েছে যে তিনি গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে একটি ‘অপরাধ’, করেছেন একটি ‘ফৌজদারি অপরাধ’ ক/রেছেন। এছাড়া আশেপাশে ঝিঙার খেত থাকলে সেখান থেকে নিলেন না কেন? তবে দেশের শিক্ষিত সমাজ এসব বিষয় ভালোভাবে নিচ্ছে না। চলছে নানা প্রতিবাদ। যা এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। সবাই যখন সমালোচনা করছেন, তখন তা থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরীন বাদ যাবে কেন! এ নিয়ে তিনি তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন
পোস্টটি ঠিক এই রকম:
একাত্তর টিভিতে তিনজন মূর্খ নারী-সাংবাদিকের হাস্যকর, বিরক্তিকর, অভদ্র, অশালীন, অশ্লীল মন্তব্য দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম একজন যে ভাবে কৃষিবিজ্ঞানীর নতুন গবেষণা নিয়ে এবং গবেষককে অপমান ও বদনাম করা হয়েছে। সম্ভবত বাংলাদেশ এমন একদল নির্বোধের দল যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে বসার সুযোগ পেয়েছে শুধুমাত্র সরকারের তোষামোদ করার দক্ষতার কারণে। যাদের বিজ্ঞান সম্পর্কে, বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কে, গবেষণা পত্র প্রকাশ সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান নেই, তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয় গবেষকের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করার! একাত্তর টিভিতে গবেষকের নতুন গবেষণা নিয়ে আলোচনা করার কথা ছিল। একজন বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানমনস্ক ব্যক্তিকে বেছে নেওয়া যার গবেষণার সঠিক ধারণা রয়েছে।
আজকাল টেলিভিশনে এমনটা হয়েছে, ঘটে দু’ছটাক বু/দ্ধি নেই, এমন মেয়েদের কিছু কৌশল শিখিয়ে টিভি ক্যামেরার সামনে বসিয়ে দিয়ে থাকে। যাদের সম্বল ব/লতে সুন্দর নাক-চোখ-মুখ, সুন্দর পোশাক, সুন্দর শরীর। তারাই খবর পড়ে, তারাই রাজনীতিবিদদের সাথে আলোচনায় বসেন, তারাই বিজ্ঞানীদের প্রশ্ন করেন, তারাই অর্থনীতি সম্পর্কে জ্ঞান দেন, তারাই শিল্প ও সাহিত্য সম্পর্কে তাদের মতামত প্রকাশ করেন। মানুষ প্রতিদিন তাদের দেখছে, তারা জনপ্রিয় হচ্ছেন, তারা অভিজাত বুদ্ধিজীবী হয়ে উঠছে।
দেশ যখন রসাতলে যায়, এভাবেই চলে।
প্রসঙ্গত, প্রকৃত যে বিষয়ে যাদের কোনো জ্ঞান নেই তার যদি অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেন তাহলে পরিস্থিতি কেমন হতে পারে এমনটি প্রশ্ন এই লেখিকার। তিনি বলেন, যোগ্যতা না থাকার পরও তাদের যে সব স্থানে বসানো হয়েছে সেটি অযুক্তিক যা কারর কাম্য নয়।